
শামসুন্নাহার,চাঁপাই নবাবগঞ্জ।
বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর সোনামসজিদ। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত এ বন্দর দিয়ে প্রতিদিন শত শত ট্রাক পাথরসহ নানান পণ্য আমদানি ও রপ্তানি হয়ে থাকে। রাজস্ব আয়ের দিক থেকেও বন্দরটির গুরুত্ব অপরিসীম। প্রতিবছর সরকার এ বন্দর থেকে প্রায় এক হাজার দুই শত কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহ করে থাকে
তবে সীমান্তের দুই পাশে বাংলাদেশের সোনামসজিদ এবং ভারতের মহদীপুর স্থলবন্দরে সাম্প্রতিক সময়ে একটি চোরাকারবারী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই সিন্ডিকেট বৈধ পণ্যবাহী ট্রাকের ভেতরে অবৈধ পণ্য প্রবেশ করানোর কৌশল নিয়েছে। বিশেষ করে ভারতীয় ড্রাইভারদের যোগসাজশে মোবাইল ফোন, ফেনসিডিল ও অন্যান্য মাদকদ্রব্য চোরাচালানের ঘটনা বাড়ছে।
ক্ষতিগ্রস্ত বৈধ ব্যবসা-বাণিজ্য সোনামসজিদ আমদানি রপ্তানিকারক গ্রুপের সেক্রেটারি জনাব অরিফ উদ্দিন ইতি জানান,বৈধ পথে অবৈধ মালামাল প্রবেশ করায় পুরো বন্দরকে ঘিরে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে। প্রকৃত ব্যবসায়ীরা নানা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এমনকি অনেক আমদানিকারক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। তাদের মতে,দীর্ঘদিন ধরে সুনাম অর্জন করা সোনামসজিদ স্থলবন্দর এখন সুনামহানির ঝুঁকিতে পড়েছে।
বন্দরে অবৈধ চোরাচালান কেবল ব্যবসায়ীদের ক্ষতিই করছে না একই সঙ্গে দেশের অর্থনীতি ও সমাজে ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন,রাজস্ব আয় ব্যাহত হলে জাতীয় অর্থনীতিতে চাপ পড়বে। অন্যদিকে মাদকদ্রব্য প্রবেশের কারণে তরুণ সমাজের জন্য তৈরি হচ্ছে গুরুতর ঝুঁকি।
ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন অবৈধ সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য রোধে পর্যাপ্ত উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তাদের দাবি বিজিবি,কাস্টমস এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। অবিলম্বে চোরাকারবারীদের শনাক্ত করে দমন না করলে সোনামসজিদ স্থলবন্দর ধীরে ধীরে বৈধ ব্যবসার পরিবর্তে অবৈধ পণ্যের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
দেশের অন্যতম বৃহৎ স্থলবন্দর হিসেবে সোনামসজিদের গুরুত্ব ক্রমশ বাড়ছে। এ বন্দরকে কেন্দ্র করে হাজারো মানুষের জীবিকা নির্ভরশীল। তাই চোরাকারবারীদের দমন করে বন্দরটির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। ব্যবসায়ী মহলের একটাই প্রত্যাশা বৈধ ব্যবসার সুরক্ষা হোক,রাজস্ব আয়ের ধারাবাহিকতা বজায় থাকুক।